বসন্তে রঙের উৎসব

খুব ছোটবেলা থেকে শোনা যে গান দিয়ে শুরু হত দোলের উৎসব তা আজও মনোগ্রাহী। এখনো নতুনভাবে আবিষ্কার করে চলি।

মৌমাছি ফিরে যাচি ফুলের দখিনা,
পাখায় বাজায় তার ভিখারির বীণা।

আচ্ছা, কি চমৎকার দৃশ্যকল্প না! এখন অনেক কমে গেছে কিন্তু আমাদের ছোট বেলাতে সত্যিই বীণা বা একতারা বাজিয়ে ভিখারির।
ভাবা যায়, মৌমাছি ভিখারি হয়ে বীণা বাজিয়ে বারবার (ফিরে) ফুলের মধু পানের জন্য তার দাক্ষিণ্যের (ফুলের দখিনা) আবদার করছে (যাচি)!

পুরো গানটিতেই কি অপূর্ব বসন্ত সমাগমের বর্ণনা।

রাঙা হাসি রাশি রাশি অশোকে পলাশে,
রাঙা নেশা মেঘে মেশা প্রভাত-আকাশে,
নবীন পাতায় লাগে রাঙা হিল্লোল।
খোল্‌ দ্বার খোল্‌।

বছরের যে কোন সময় শুনলেই দোল খেলতে ইচ্ছে করে যে! এই না হলে গুরুদেব!

আমাদের বাড়িতে একটি গ্রামোফোন ছিল, রেকর্ড ছিল মাত্র চল্লিশটি। বেশির ভাগ রবীন্দ্রসঙ্গীত। কতিপয় ফিল্মি গানের মধ্যে একটি গানে দোলের অনুষঙ্গ বারবার মুগ্ধ করতো। বস্তুতঃ বালিকা বধূ সিনেমা দেখতে আকৃষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ ছিল এই গানটি।

হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের ভগবানের গলাতে –

কোনো মানা নহি মানি
রাঙাবো বসনখানি
ভুবনে এসেছে আজি মধু ফাগুয়া।
ওগো নাগরী কাঁখে ডাগরি
শোনো নীপশাখে গাহে কুহূ
ঝুলনে দুলিবো দুহু
রাঙাবো তোমারি তনু ওগো বধুঁয়া।

আজ বধুঁ সারাবেলা
হবে শুধু হোলি খেলা
ভুবনে এসেছে আজি মধু ফাগুয়া!

দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এই গানের চিত্রায়িত দৃশ্যটি আর পাওয়া যায় না। তবে গানটি কিন্তু রয়েছে।

সেই গানেই রইল দোলযাত্রার শুভেচ্ছা।

4 thoughts on “বসন্তে রঙের উৎসব

Leave a reply to bhaskarbose1960 Cancel reply