শারদীয়া সাহিত্য ও দুই সম্পাদক – প্রথম পর্ব

এবার মুদ্রিত   শারদীয়া পত্রিকাতে আমার দুটি লেখা প্রকাশিত হয়েছে।

একটি ছোটদের শারদীয় পত্রিকা – হাট্টিমাটিম। সেখানে একটি ভ্রমণ কাহিনী –

পরিবেশের পুণ্যভূমি লেহলাদাখ

অন্য লেখাটি প্রকাশিত হয়েছে বহুস্বর পত্রিকার শারদীয় সংখ্যাতে।

লেখায় ও রেখায়- অনন্য যুগলবন্দী

লেখাগুলি নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। আমার এই লেখা সেই দুই সম্পাদককে নিয়ে যাঁদের অনুপ্রেরণাতে আমার এই লেখা।

আজ প্রথম পর্বে – শেখর বসু।

আমাদের সময় কিশোর সাহিত্যের রমরমা ছিল। সত্যজিৎ, সুনীল, শীর্ষেন্দু, বিমল কর, শৈলেন ঘোষ, নবনীতা দেবসেন, সব্বাই এক্কেবারে জমিয়ে লিখছেন। এই সময় একটি আনন্দমেলাতে একটি অদ্ভুত ছোটদের গল্প পড়লাম – “ঘুমের ওষুধ”!!

গল্পটি ভারী মজার!! ছোট করে বলছি।

একটি বাচ্চা ছেলের আঙুল না চুষলে ঘুম আসে না। তার মা তাকে বারবার বদ অভ্যাসটি ছাড়ানোর চেষ্টা করেও  অসফল। একদিন রাত্রে ঘুম ভেঙে ছেলেটি দেখে মা র ঘুম আসছে না!! মা খুব বিরক্ত। ছেলেটি তখন মাকে পরামর্শ দেয় আঙুল চুষে ঘুম আনানোর চেষ্টা করতে। মা তো রেগে আগুন! কিন্তু ছেলের পীড়াপীড়িতে চেষ্টা করতেই, আশ্চর্য ফল!!  সঙ্গে সঙ্গে মার দুচোখে ঘুম নেমে এল। পরদিন রাত্রে ছেলেটি ঘুম ভেঙে এক দৃশ্য দেখে হতবাক –বাবার ও ঘুম আসছে না, অথচ পরের দিন জরুরী কাজ। আর  মা বাবাকে  আঙুল চুষে ঘুম আনানোর পরামর্শ দিচ্ছেন। তারপর শেষ অবধি বাবা মার কথাতে রাজী হলেন। ছেলে বেশ জোরে আঙুল চোষার শব্দ পেল এবং তারপরেই বাবার নাক ডাকার শব্দ। এবারে মার খুব লাজুক আঙুল চোষার শব্দ ও ঘুম। নিশ্চিন্ত মনে ছেলেটিও আস্তে আস্তে আঙুল চুষতে চুষতে ঘুমিয়ে পড়ল।

লেখকের নাম – শ্রী শেখর বসু। এরপরেও ওঁর বেশ কিছু গল্প পড়েছি, পড়ে ফেলেছি একটি টানটান থ্রিলার, “সোনার বিস্কুট” – আনন্দমেলাতেই।

একবার ওঁর সঙ্গে আলোচনা হচ্ছিল “দাদার কীর্তি” সিনেমা নিয়ে।  শেখরবাবু আমাকে জিজ্ঞেস করছিলেন, আমি আনন্দমেলাতে ধারাবাহিক ভাবে বেরোনো চিত্রকাহিনী ‘সদাশিব’ পড়েছি কিনা। আমি জানালাম যে আমি উদগ্রীব থাকতাম ঐটি পড়ার জন্য। উনি জানালেন ঐ কাহিনীর চিত্রনাট্যকার ছিলেন স্বয়ং তরুণ মজুমদার – ওঁর নিজের কথায়-

“শরদিন্দুর ‘সদাশিব’ কাহিনীর চিত্ররূপ তখন আনন্দমেলায় ধারাবাহিক ভাবে বার হত । অসাধারণ সব ছবি আঁকতেন শিল্পী বিমল দাস। সুরসিক এই মানুষটি তখন আনন্দমেলার কর্মী ছিলেন। অত ভালো চিত্ররূপ আমি আর কোনও বাংলা কাহিনীর দেখিনি। কেন যে ওটি গ্রন্থাকারে বার হল না—আজও বিস্ময়! হলে বাংলা চিত্রকাহিনির একটি চিরকালীন সম্পদ হতে পারত। ছবিটির চিত্রনাট্য লিখতেন বিখ্যাত চিত্রপরিচালক তরুণ মজুমদার। কি আঁটোসাঁটো চিত্রনাট্য! কাহিনি মুহূর্তের জন্যেও কোথাও ঝিমিয়ে পড়েনি চিত্রনাট্যের গুণে। তিনি প্রায়ই আসতেন আমাদের দফতরে। সম্পাদক ও চিত্রশিল্পীর সঙ্গে কথা বলতেন। সুবিধে-অসুবিধে জেনে নিতেন চিত্রনাট্য আরও নিখুঁত করার জন্যে। সেই সময়ে আমিও মাঝেমধ্যে উপস্থিত থাকতাম।”

এই লেখাটি ফেসবুকে দেওয়ার পর উনি যে প্রশংসাবাক্যটি দিয়েছিলেন তা আমাকে উল্লসিত করেছিল, কিন্তু লজ্জাতেও ফেলেছিল – লিখেছিলেন,-

“ফ্লবের বলেছেন–যাঁর দেখার চোখ আছে, গল্পের জন্য তাঁর বাইরে ছুটোছুটি করার দরকার নেই। আর যাঁর শোনার কান আছে? তিনি বোধহয় গল্পগুজবের ভেতর থেকেও তথ্য খুঁজে পান…বেশ হয়েছে লেখাটি…”

ওঁর কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। এখনও শিখে চলেছি। আমাদের “অবসর” পত্রিকার উনি একজন বড় অনুপ্রেরণা। প্রতিটি সংখ্যা পড়েন এবং মন্তব্য করেন, – “অবসর” এর প্রতি ওঁর এই অকুণ্ঠ ভালবাসা আমাকে বিস্মিত এবং আপ্লুত করে।  এবারে ওঁর সম্পাদিত “হাট্টিমাটিম” পত্রিকা প্রকাশের সময় কি লিখবো ভাবনাতে উনিই বললেন, ‘এত তো বেড়াতে যান, একটা ভ্রমণ কাহিনীই লিখুন।” লিখে ফেললাম তাই!

পত্রিকাটি প্রকাশিত!

 

পত্রিকা সংগ্রহ করতে হলে – প্রকাশকের কাছ থেকে –

এখানে

তাছাড়া ও পাওয়া যাচ্ছে, –

কলেজ স্ট্রিট: দেজ পাবলিশিং, অভিযান বুক স্টোর, ভারতী বুক স্টল, দে বুক স্টোর(দীপু), অরণ্যমন ও আদি দে বুক স্টোর, ধ্যানবিন্দু।

উল্টোডাঙা:
আশীর্বাদ বুক স্টল (ক্যাপিটাল ইলেকট্রনিক্স ও ডাকব্যাগের শোরুমের মাঝে)

শ্যামবাজার:
মৈত্র বুক স্টল (শ্যামবাজার মেট্রো, ব্যাঙ্ক অফ ইণ্ডিয়ার সামনে)

গড়িয়াহাট:
এম লাল বুক শপ(আনন্দমেলার পাশে)

রাসবিহারী/লেক রোড:
রীডবেঙ্গলী বুকস্টোর
৪২এ, সর্দার শঙ্কর রোড
(লেক মার্কেট চারুচন্দ্র কলেজের পিছনে)
৮১০০৯০৫৫৬৬

রুবি ইএম বাইপাস:
সুদীপ্তার সম্ভার( 8697894547)

এক্সাইড মোড়:
সুবীরদার দোকান(জাইকার পাশে, মেট্রোর পিছনে)

কলকাতা ও হাওড়া:
দ্য বুক টক(7278079560)

পরের পর্বে লিখছি দ্বিতীয় পত্রিকাটির কথা।

 

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s